একজন সন্দেহবাদী নারীর নিচের ৪টি প্রশ্নের জবাবঃ

                                                              শাহ আলম বাদশা

4:34-পুরুষ নারীর কর্তা 
2:282-দুজন নারী=একজন পুরুষ 
2:223-'তোমাদের স্ত্রী তোমাদের শস্যক্ষেত্র।তাই তোমরা তোমাদের শস্যক্ষেত্র যেভাবে ইচ্ছে যেতে পারো' 
সম্পত্তি নির্ধারনেও নারীর সমধিকার নেই। 
---------------------------------------------------------- 

এটা আল্লাহর বিধান যা আপাত দৃষ্টিতে বৈষম্যমূলক মনে হলেও বিজ্ঞানসম্মত। এখানে তার বিশদ জবাব তুলে ধরা সম্ভব নয়, পরে বিস্তারিত লিখবো। তবে ঈঙ্গিত দেই সামান্য-- 

* পুরুষ নারীর কর্তা বা পরিচালক- যা প্রাকৃতিক বাস্তবতা ও বিজ্ঞানসম্মত। এ ব্যাপারে কোন পুরুষই কিন্তু আপত্তি করবেন না বা নারীকে বাড়ী বা সমাজের কর্তা হিসেবেও মেনে নেবেন না বাস্তবতঃ, যদিও অনেকে তর্কের খাতিরে আপনাকে সমর্থন করতে পারেন। অন্য প্রাণী, জীবানু,পশু-পাখিদের ক্ষেত্রেও পুরুষরাই পরিচালক, যা খালি চোখেও দেখা যায়--দেখবেন। সৃষ্টি টিকতে হলে সবাই যেমন কর্তা হলে বিপদ তেমনি সবাই অধিনস্থ হওয়ায় অসম্ভব। যে পরিবারে পুরুষ কর্তা নয় বা তাকে এভাবে মানা হয় না, সেখানে সামান্য ব্যতিক্রম ছাড়া কুরুক্ষেত্রই চলে, দেখবেন। 

* দুজন নারী=একজন পুরুষ, ব্যাপারটি কিন্তু এমন নয়। এটি শুধুমাত্র স্বাক্ষ্য ও মিরাশী/সম্পত্তি আইনের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য; এটাও বিজ্ঞানসম্মত। বর্তমান সমাজ ও আইন যেমন নারীর জন্য সমানাধিকারের কথা বললেও মূলতঃ নারীকে অগ্রাধিকারই (যা সমানাধিকারেরও উপরে) বেশী দিয়েছে বা তাদের জন্য কোটাপদ্ধতিও চালু করেছে তেমনি ইসলামও অনেক আগেই নারীকে লিঙ্গগত কারনেই উপরোক্ত কয়েকটি ক্ষেত্রে সমানাধিকার নয় বরং অগ্রাধিকারই দিয়েছে যাকে আপনি বৈষম্য বলছেন। 

নারীর কোটা পদ্ধতি কি সমানাধিকার? নাকি বৈষম্যমূলক? আসলে একটাও নয় বরং ইসলামসম্মত। বাসে নারীর জন্য ৯টি সীট রিজার্ভ কি সমানাধিকা নাকি বৈষম্যমূলক? এটাও ইসলামসম্মত। মায়ের জাত হিসেবে নারীর সম্মান পুরুষের ওপরেই থাকা দরকার, যা একমাত্র ইসলামই নিশ্চিত করেছে? কই এসব ব্যাপারে তো নারীরা লড়ে না, বরং রিজার্ভ সীটে পুরুষ বসলেই আসল রূপ ফুটে ওঠে অনেকের যারা মুখেই শুধু নারীমুক্তির কথা বলেন। 

বিদ্যুতবিল বা গ্যাস বিলের জন্য দেখবেন ব্যাংকে নারীর আলাদা লাইন বা যৌথ লাইন থাকলেও দু'জন নারীর পর একজন পুরুষের বিল নেয়া হয় সাধারনত। এখানে একটু হেরফের হলেই নারীরাই প্রতিবাদ করেন। কিন্তু এটা বলে না যে, নারীর অধিকার ক্ষুন্ন করে ২ নারী=১ পুরুষ করা হলো কেনো? 

*আর শস্যক্ষেত্র ভালো না খারাপ উপকারী না অপকারী তা আগে বোঝেন, তবেই এ আয়াতের মানে বুঝবেন। শস্যক্ষেত্র অপন্দ করে এমন কেউ নেই দুনিয়ায়। শস্যই জীবন বাঁচায় দুনিয়া বাঁচায় মানে নারীরাই দুনিয়ার মুলশক্তি, যার ওপর নির্ভরতা ছাড়া কোন পুরুষ টিকে থাকতে পারেনা।শস্যক্ষেত্র ধ্বংস হলে কৃষকের যে দুর্দশা হয় সংসারে নারীর গুরুত্ব এর চেয়েও বেশী দিয়েছে ইসলাম। নারী ছাড়া একটি মানুষও সৃষ্টি হয় না, তাই নারী মর্যাদা বাড়ানোই এর উদ্দেশ্য, যাকে আপনারা নেগেটিভ ভেবে বসেন। শস্যক্ষেত্রর দিকে তাকিয়ে কর্তা যেমন আনন্দিত হন তেমনি নারীর প্রতিও তাকিয়ে পুরুষ সুখি হোক, এটাই ইসলাম চায়। তাই নারীকে বা 'তোমাদের স্ত্রী তোমাদের শস্যক্ষেত্র' নয়বরং শস্যক্ষেত্রস্বরূপ বলেছে কুরআন । 


* সম্পত্তি নির্ধারনেও নারীর সমধিকার নেই, এটা মিথ্যে অভিযোগ বরং নারীকেই বেশী সম্পত্তি দেয়ার আইন করেছে ইসলাম। নারী অগ্রাধিকার ও বেশী মর্যাদার কারনে ফরজ হিসেবে মোহরানা পেতে বাধ্য নিজের একক অধিকার হিসেবে, যা থেকে পুরুষকে বঞ্চিত করা হয়েছে। অথচ বাপের সম্পত্তি মেয়েও পাবে ছেলেও পাবে হোক ১:২ অংশই। 
আবার স্ত্রী স্বামীর সম্পত্তিরও অধিকার পায় । 


* সংসার চালানো, সবার ভরন-পোষন, দুপক্ষের আপ্যায়নসহ সব আর্থিক দায়িত্বই যেখানে পুরুষের আর নারী একদম মুক্ত তার প্রাপ্ত ও প্রাপ্য সম্পত্তি নিয়েই, সেখানে বরং পুরুষই বৈষম্যের শিকার--বলা যায়? 

এখন যোগ -বিয়োগ করেই দেখুন কার অধিকার ও সম্পত্তি বেশী হলো? 

এখন বলুন, ইসলামে কার গুরুত্ব বেশী নারী না পুরুষের? অবশ্যই নারীর। তাই সন্তানের বেহেস্তে যাবার শর্তই হলো মায়ের সন্তুষ্টি; মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেস্ত--একে কী বলবেন? 

ধন্যবাদ আপনার জিজ্ঞাসু মনের জন্য । 

 

Comments

Post a Comment